প্রসঙ্গঃ কিটো ডায়েট।

আজকালকার দিনে স্থূলতা খুব বড় একটা সমস্যা। এ থেকে বাঁচতে শর্টকাট পদ্ধতি হিসেবে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন বিভিন্ন রকম ডায়েট প্ল্যান। কিন্তু এক্সট্রিম কিছু মেনে নিতে নারাজ আপনার দেহ। অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা যেমন বাড়িয়ে দেয় স্থূলতা, তেমনি অতিরিক্ত লো কার্ব ডায়েট, যেমন ফ্যাট নির্ভর কিটো ডায়েটও বাড়িয়ে দেয় নানামুখী জটিলতার ঝুঁকি। কিটো কিংবা এরকম অতিরিক্ত লো কার্ব ডায়েটের তাৎক্ষণিক সাফল্য এর জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ। তবে দীর্ঘমেয়াদে এর ফলাফল সুখকর নয়।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রথমসারির জার্নাল দি ল্যানসেটে প্রকাশিত একটা গবেষণায় সাড়ে ১৫ হাজার মানুষের ওপর ২৫ বছর ধরে চালানো গবেষণায় দেখা যায়, লো কার্ব ডায়েট তাৎক্ষণিক ওজন কমালেও দীর্ঘমেয়াদে মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় প্রায় ২০ শতাংশ। প্ল্যান্ট প্রোটিন কিংবা প্ল্যান্ট ফ্যাটের (যেমন বাদাম, ডাল) ক্ষেত্রে অবশ্য ঝুঁকি কিছুটা কম। তবে এনিমেল ফ্যাট, যেমন ঘি, মাখন, তৈলাক্ত লাল মাংস অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। আশ্চর্যজনকভাবে অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণেও মৃত্যুঝুঁকি বাড়ে ২০ শতাংশ। গবেষণায় সবচেয়ে ভালো ডায়েট হিসেবে সাজেস্ট করা হয়েছে ৫০-৫৫% কার্বোহাইড্রেটযুক্ত ডায়েটকে।

কিটো ডায়েট কারা করতে পারবেন?

সুস্থ মানুষ, যাদের অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণের ফলে ওজন বেড়ে গিয়েছে, কেবলমাত্র তারাই চিকিৎসকের পরামর্শমতো কিটো ডায়েট করে ওজন কমাতে পারেন। তবে প্রকৃতি আপনার শরীরকে যেভাবে তৈরি করেছে, তার বাইরে গিয়ে এরকম ক্রাশ ডায়েটের দীর্ঘমেয়াদী ফলাফল খুব পজিটভ নয়।

কিটো ডায়েট কাদের জন্য নয়?

কিডনি কিংবা লিভারের অসুখ যাদের আছে, যাঁরা ডায়াবেটিস কিংবা অন্যান্য ক্রনিক রোগে ভুগছেন, এধরণের ক্রাশ ডায়েট তাঁদের অবস্থার অবনতি ঘটাতে পারে, কেননা এটি ডায়াবেটিক কিটো এসিডোসিস এর ঝুঁকি বাড়ায়, যা ডায়াবেটিস এর একটি মারাত্মক জটিলতা। সাময়িক উন্নতি হলেও পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক ক্ষতি ও মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায় বলে গবেষণায় দেখা গেছে। আর আপনার শারীরিক অবস্থা অনুসারে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কেবল কারো সাধারণ পরামর্শে বা ফেসবুক, গুগল বা ইউটিউব দেখে এ ধরণের ডায়েট শুরু করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart